•
গল্পের ছেলেটার নাম তাওহীদ।সে ছেলে দেখতে খুব ভাল, কিন্তু কাজে কর্মে খুব বাজে। সে বিভিন্ন ধরণের ক্রাইম করে, অসামাজিক কাজ করে।বিভিন্ন মেয়েদের সাথে প্রেমের অভিনয় করে।তারপর রাত কাটিয়ে ব্রেক-আপ করে।আর যে মেয়েরা রাজী না হয়, তাকে কোনো না কোনো ভাবে ক্ষতি করে।
তার একটা বিশেষ গুণ ছিল, সেটা হল তার কথা শুনে যে কেউ মুগ্ধ হয়ে যেত।আর একটা কাজ ভাল পারতো তা হল ভাল গিটার বাজাতে পারতো।এই জিনিস গুলো দিয়ে যে কোনো মানুষের কাছে ভাল সাজতে পারতো এবং যে কোনো মেয়েকে সহজে পটিয়ে ফেলতে পারতো।কিন্তু তার চেহারা ও চাল-চলণ দেখে কেউ বুঝতে পারতো না তার উদ্দেশ্য কি থাকতো!
•
গল্পের মেয়েটার নাম সাথী।সে দেখতে খুব মায়াবী।যেই তাকে দেখতো সেই তাকিয়ে থাকতো।আবার সে খুব ইমুশনাল ছিল ও এক দুই কথায় খুব সহজেই অপরিচিত মানুষকে বিশ্বাস করে ফেলতো।বর্তমান সময়ে যতটুকু চালাক হওয়ার দরকার সে ততটুকু চালাক ছিল না। আবার বর্তমান সময়ের পরিবেশ দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারতো না।তাই আধুনিক পরিবেশের মত করে নিজেকে বানাতে চেষ্টা করে যেত।
সে তার বাবা-মা এর কথা মানতো না।বাবা-মার কথা না মেনে আধুনিক পরিবেশে ডুবতে থাকে।আধুনিক পরিবেশের ভাল-মন্দ যাই দেখে তাই শিখতে থাকে।কোনটা ভাল কোনটা মন্দ তা আর বিচার করে না।
একদিন এক ছেলেকে দেখে আর ঐ দেখাতেই ছেলেটার প্রেমে পড়ে। আর এই প্রেমে পড়াটাই ছিল তার জীবনের চরম ভুল।
•
সাথী ভার্সিটিতে যেত ক্লাস করতো।তারপর ক্লাস শেষে বান্ধুবীদের সাথে ক্যাম্পাসে আড্ডা দিতো, মজা করতো বা ঘুরা-ফেরা করতো।আর বর্তমান যুগের সাথে ও বান্ধবীদের সাথে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করতো।
কিছুদিন ধরে সে একটা ছেলেকে লক্ষ করছে।ছেলেটাকে সব সময় গিটার বাজানো অবস্থায় দেখতো; কখনো গিটার ছাড়া দেখতো না।প্রতিদিনেই যখন ভার্সিটিতে থেকে ফিরতো তখনেই ছেলেটাকে পার্কে দেখতো।ছেলেটাকে দেখলে তার মনে কি রকম যেন একটা অনুভূতি আসতো।
সেই অনুভূতিটা সে কাউকে বোঝাতে পারবে না।নিজেই সে অনুভূতিটার মাঝে ডুবে থাকতো। যখনেই একা থাকতো তখনেই কল্পনার রাজ্যে ঐ ছেলেটাকে নিয়ে হারিয়ে যেত।
এভাবে দেখতে দেখতে অনেক দিন চলে যায়। কিন্তু ছেলেটার সাথে কথা বলতে সাহস পেত না।যখনেই পার্কের কাছে আসতো তখনেই তার হাঁটার গতিটা কমিয়ে দিত।তারপর এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকতো আর গিটারের ধ্বনি শুনতে শুনতে চলে যেত।কিন্তু কথা বলতে অনেক চেষ্টা করতো; তার পরেও কথা বলতে আর পারতো না।
•
তাওহীদ তার হাবভাব দেখে মনে মনে অনেক হাসতো।
তারপর মনে মনে বলতো মেয়ে তুমি তো চিননা আমাকে যদি চিনতে তাহলে আমার কাছ থেকে দূরে দূরে থাকতে।এভাবে আরও কিছুদিন চলে যায়।
এখন তাওহীদ ও তাকে মাঝে মাঝে দেখে, তার চোখ দিয়ে মিথ্যা ভালবাসা প্রকাশ করে।তাওহীদের এই তাকানো দেখে সাথী জ্বলে পুড়ে মরে।
না পারে তাকে কিছু বলতে না পারে এই যন্ত্রনা সহ্য করতে।একদিন তাওহীদ একটা রোমান্টিক গান বাজাতে থাকে।এই গানের টোন শুনে সাথী নিজেকে আর আটকাতে পারেনি; সাথে সাথে তাওহীদের কাছে যায়।তারপর তাকে প্রপোস করে বসে তাওহীদ ও গ্রহন করে নেই।কারণ সে তো এই দিনের জন্যই অপেক্ষা করেছিল।
•
প্রপোস করার পর বলে
- আমি তো আপনার নামটাই জানলাম না! নামটা বলবেন না?
- আমি তাওহীদ। তুমি?( জেনেও না জানার ভাব ধরেছে)
- আমি সাথী ।
- খুব সুন্দর নাম।
- তাই না?(মুচকি হাসি দিয়ে)
- হুম।
এভাবে শুরু হয়, তাদের ভালবাসার পথ চলা।যেখানে আছে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না ও মিষ্টি ভালবাসা।সাথী তাকে মন থেকে ভালবাসত।আর সে! তার শরীর-টা কে ভালবাসত।কিন্তু কোন সময় তা বুঝতে দিতো না।
সাথীর পরিবর্তন দেখে তার বাবা-মা তাকে অনেক বোঝাতো; কিন্তু সে বুঝতে চায়তো না। বাবা-মাকে ভুল বুঝতো।
আরও বাবা-মাকে উল্টা-পাল্টা বুঝ দিতো।
•
দিন যেতে থাকে তাদের সম্পর্ক আরও গভীর হতে থাকে।যদি কখনো সাথী তার সম্পর্কে জানতে চায়তো; তাহলে বলতো সময় হলেই সব জানতে পারবে, বুঝতে পারবে। সাথী তার কথা সরল মনে বিশ্বাস করে চুপ করে থাকতো।
মাঝে মাঝে তাওহীদ দুষ্টামি করেই তার মনের কথাটা সাথীকে বলতো চল আমরা বিয়ের আগেই কিছু করে ফেলি! তা শুনে সাথী বলতো বিয়ের আগে এসব উল্টা-পাল্টা কাজ করা ঠিক না।যদি আমাকে সত্যি ভালবাসেন তাহলে এসব আর বলবেন না। তখন তাওহীদ মন খারাপের অভিনয় করতো।
•
ধীরে ধীরে ডিসেম্বর মাসের থার্টি ফার্স্ট নাইট আসতে থাকে।তাওহীদ তার মত করে প্ল্যান সাজাতে থাকে। থার্টি ফার্স্ট নাইটের দিন অনেক কষ্ট করে সাথীকে পার্টিতে নিয়ে আসে।তারপর ছলে বলে কৌশলে বেয়ারের সাথে আরও ঔষধ মিশিয়ে সাথীকে অন্য জগতে নিয়ে চলে যায়। তারপর একটা ঘরে সাথীকে নিয়ে আনন্দে মেতে উঠে।আর সাথী! ঔষধ খেয়ে সেও এই অবৈধ আনন্দে মেতে
থাকে।
যখন সাথীর জ্ঞান ফিরে ও অনুভূতি আসে তখন নিজেকে অপরাধী মনে করতে থাকে।তারপর পাশে ফিরে দেখে তাওহীদ শান্তিতে ঘুমিয়ে আছে।সাথীর রাতের দৃশ্য গুলো মনে হতেই তার শরীরটা শিউরে উঠে, আর চোখ দিয়ে পানি ঝরতে থাকে। মনে মনে বলে এটা সে কি করল! তখন তার বাবা-মা ও কয়েকটা বান্ধবীর কথা মনে হতে থাকে।কিন্তু এখন মনে হলে কি হবে! তার তো সবেই শেষ।
•
এই রাতের পর থেকেই তাওহীদ পরিবর্তন হতে থাকে, তার আসল রুপ দেখাতে থাকে। তাকে এখন এড়িয়ে চলে, সাথী রাগে বা অভিমানে কথা বললে তাকে বাজে ভাষায় কথা বলে।তাওহীদের কথা শুনতো আর সাথী অবাক চোখে তার দিকে তাকিয়ে
থাকতো।
কিছুদিন পর তাওহীদের কোনো খবর নেই। তাকে অনেক খোজে কিন্তু পায় আর না।কোথায় আছে কি করছে সে জানে না। তাওহীদকে কি করে পাবে! সে তো এই শহর ছেড়ে চলে গেছে তারমত অন্য কোনো মেয়েকে ভোগ করতে। তার কিছুদিন পর বুঝতে পারে তার পেটে সন্তান এসেছে।কিন্তু সে তো তাওহীদকে খোজে পায় না! আর এখন এই কথা তার বাবা-মাকে কি করে বলবে?
এই গুলো চিন্তা করতে থাকে আর তখনেই তাওহীদের কথা গুলো মনে হতে থাকে। তাওহীদের কথা গুলো মনে হতেই এখন তার নিজেকেই নিজের ঘৃণা করছে।সে চায় না, তার এই নষ্ট জীবন বাঁচিয়ে রাখতে।
তারপর রাতের আঁধারে আত্মহত্যা করে।
•
বিঃদ্রঃ গল্পটা কল্পনা থেকে নেওয়া।অনেকেই বয়ফ্রেন্ডের মন বা কথা রাখতে গিয়ে এই রাতে অনেক কিছু করেন বা করবেন।আবার অনেকেই কোনো কিছু করবেন না।
এই অবৈধ কাজ করার পর যখন প্রতারণার শীকার হয়, তখনেই অনেকে এই পথটা বেছে নেয়।কিন্তু এই অবৈধ কাজ করার আগে কি আমরা কখনো ভাবি! না ভাবি না।
যে প্রকৃত ভালবাসে সে শরীরটাকে না মনটাকে ভালবাসে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন